স্টাফ রিপোর্টার,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন::
রাজশাহীতে হিন্দু মৌলবাদী সংগঠন কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ ইসকনের এক সদস্যের যৌন লালসার শিকার হয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী। ওই ইসকন-সদস্যের নাম শ্যামল বণিক। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রভোস্ট ও ভাষা বিভাগের অধ্যাপক বিথীকা বণিকের ভাই।
জানা যায়, অধ্যাপক বিথীকা বণিকের বাসায় প্রাইভেট পড়াতে গিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এক ছাত্রী। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওই শিক্ষকের ভাই শ্যামল বণিক তাকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে আজ বুধবার বিকেলে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন অধ্যাপক বিথীকা বণিক সমস্যার কারণে আমাকে হলে আসতে হয়েছিল। রাতে খবর পেয়ে বাসায় গেলে ইংরেজি বিভাগের ওই ছাত্রী বলে, আমার ভাই তাকে রেপ (ধর্ষণ) করেছে।’
এ বিষয়ে মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান বলেন, ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হতে শারীরিক পরীক্ষার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল রাত ৩টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে অধ্যাপক বিথীকা বণিকের রাজশাহী নগরীর ধরমপুর এলাকার যোজক টাওয়ারের বাসায় ডেকে নিয়ে যান ওই ছাত্রী। নগরীর মতিহার থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। পরে অভিযোগ পেয়ে শ্যামল বণিককে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে মতিহার থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বিনোদপুর এলাকায় যোজক টাওয়ারের তৃতীয় তলায় বিথীকা বণিকের বাসায় তার সন্তানকে পড়াতে যান ভুক্তভোগী ছাত্রী। বৃষ্টির কারণে বিথীকা বণিকের বাসায় অবস্থান করেন ওই ছাত্রী। দিবাগত রাত ৩টার দিকে শ্যামল বণিক ভুক্তভোগীর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে বলে জাতীয় নিরাপত্তা সেবার ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে। পরে আমরা তাকে বাসা থেকে উদ্ধার করি।
রাতে যা ঘটেছিল – বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হলের প্রভোস্ট ও আটক শ্যামল বণিকের বোন অধ্যাপক বিথীকা বণিক জানান, বাসায় সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত তার মেয়েকে পড়ান ইংরেজি বিভাগের ওই ছাত্রী। গতকাল তার স্বামীর মৃত্যুবার্ষিকী থাকায় রাতে ওই ছাত্রীকে বাসায় থাকতে অনুরোধ করা হয়। এ কারণে রাতে তিনি ওই বাসায় তার সঙ্গে একই বিছানায় ঘুমাতে যান। পাশের কক্ষে ছিলেন তার ভাই শ্যামল বণিক, আরেকটি কক্ষে ঘুমায় তার দুই মেয়ে।
হল প্রাধ্যক্ষ জানান, রাত দেড়টার দিকে তার কাছে হল থেকে ফোন আসে। হলে সমস্যার কথা জানতে পেরে তিনি ২টার দিকে হলে যান। হলে যাওয়ার আগে তার পাশের ভবনে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা অধ্যাপক ড. প্রভাষ কুমার কর্মকারসহ অনেককে ফোন দেন। এত রাতে হলে যাবেন কি না, সেটা তাদের থেকে জানতে চান। পরে পুলিশের সহায়তায় তিনি হলে যান। রাত ৩টার দিকে বাসা থেকে তার কাছে ফোন আসে। সমস্যার কথা শুনে তাৎক্ষণিক তিনি বাসায় আসেন। বাসায় গিয়ে শোনেন, ওই ছাত্রীকে তার ভাই ধর্ষণ করেছে।
নিজের ভাই সম্পর্কে অধ্যাপক বিথীকা বণিক উত্ততরবঙ্গ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমার ভাই দীর্ঘ দিন ধরে বাসাতেই থাকে। সে নিরামিষভোজী, শাক-সবজির বাইরে তেমন কিছুই খায় না। সে ইসকন (কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ) ভক্ত। সে যদি অপরাধী হয় তাহলে তার বিচার হোক। তবে আমি চাই সত্য রিপোর্ট আসুক।’
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.