স্টাফ রিপোর্টার,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন ::
২৮ ঘণ্টার ভোগান্তি শেষে রাজশাহীর সঙ্গে ঢাকার ট্রেন যোগাযোগ শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে সর্বশেষ বগিটি তুলে নেয়ার মধ্য দিয়ে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন হয়। এর প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা মেরামত কাজ করে ট্রেন চলাচলের উপযোগী করা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী স্টেশন থেকে ঢাকার উদ্দেশে পদ্মা এক্সপ্রেস ছেড়ে গেছে। এর আগে ঢাকা থেকে সিল্কসিটি ট্রেনটি রাত ১১টার দিকে রাজশাহী স্টেশনে এসে পৌঁছায়।
পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান প্রকৌশলী আফজাল হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, বৃষ্টি ও রাতের কারণে দুর্ঘটনাকবলিত এলাকায় পুরোপুরি লাইন মেরামত করা সম্ভব হয়নি। পরে গতকাল শুক্রবার সকালে আবার মেরামত কাজ শুরু হয়। এর আগ পর্যন্ত এই এলাকায় সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার বেগে ট্রেন চলাচলের নির্দেশনা দেয়া আছে।
তিনি আরো বলেন, রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়া রাজশাহীগামী ট্রেন ছেড়ে দেয়া হয়। রাতেই ঢাকার উদ্দেশে পদ্মা এক্সপ্রেস এবং ধূমকেতু এক্সপ্রেস রাত ২টায় ছেড়ে যায়। ওই দুটি ট্রেনের মধ্যে পদ্মা এক্সপ্রেসের রাজশাহী থেকে ছাড়ার নির্ধারিত সময় ছিল বিকেল ৪টা এবং ধূমকেতু রাত ১১টা ২০ মিনিটে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহীদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, লাইন সংস্কার কাজে নিয়োজিত প্রকৌশলীর গাফিলতির কারণে রাজশাহীতে তেলবাহী ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
প্রাথমিক তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি জানান, লাইন সংস্কার চলছিল। পুরনো কিপার পরিবর্তন ও পাথর দেয়া হচ্ছিল। কিন্তু যারা সংস্কার কাজ করেছেন তারা কিপার সঙ্গে লাইন আটকানো কয়েকটি পিন (ডগস্পাইক) খুলে রেখেছিলেন। পাথর ফেলার পর সেগুলো ঢেকে যায়। এ কারণে সেটি কারো চোখে না পড়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, তেলবাহী ৩১টি বগি নিয়ে ট্রেনটি যাচ্ছিল। প্রতিটি বগিতে রয়েছে ৫০ হাজার লিটার তেল। প্রতি বগির ওজন ৫০ টন। পিন খোলা থাকায় অতিরিক্ত চাপে লাইন সরে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানান তিনি।
তেলবাহী ট্রেনের বগি লাইনচ্যুতের ঘটনায় সংস্কার কাজে নিয়োজিত সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। একই সঙ্গে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিভাগীয় ট্রান্সপোর্ট কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুনকে। ইতোমধ্যে তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে বলে জানা গেছে।
প্রসঙ্গত, গত বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে তেলবাহী ট্রেনের ৮টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এরপর থেকে রাজশাহীর সঙ্গে রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণরূপে বিছিন্ন হয়ে পড়ে। দুর্ঘটনার পর রাজশাহী থেকে বিভিন্ন রুটে ১০টি আন্তঃনগরসহ সব লোকাল ট্রেনের যাত্রা বাতিলের ঘোষণা দেয়া হয়। বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার যাত্রীকে টিকেটের ২৬ লাখ টাকারও বেশি ফেরত দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
প্রকাশক:ফাহমিদা খান, প্রধান সম্পাদক:এম.এ.হাবিব জুয়েল,বার্তা সম্পাদক : রমজান আলী কর্তৃক উত্তরা ক্লিনিক মোড়,উপশহর,বোয়ালিয়া,রাজশাহী-৬২০৩,বাংলাদেশ থেকে সম্পাদিত ও প্রকাশিত।বার্তা কক্ষ ০১৭১৫৩০০২৬৫ । ইমেইল: uttorbongoprotidin@gmail.com