দিনাজপুরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইলের দাফন সম্পন্ন:উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিনিধি,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন :: নাজপুরের জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দেওয়া চাকরি নেবেন না অভিমানী সেই মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের ছেলে নূর ইসলাম। শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেন নূর ইসলামের ভাই নূর হোসেন।

শেষযাত্রায় রাষ্ট্রীয় মর্যাদা চাননি অভিমানী মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন। মৃত্যুর দুই দিন আগে নিজের ক্ষোভ-দুঃখের কথাগুলো লিখে রেখে যান স্বজনদের কাছে। বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১১টায় মারা গেলে পরদিন বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ইসমাইল হোসেনকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ছাড়াই দাফন করা হয়। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা শেষ বিদায় নেন প্রশাসনের স্যালুট ও বিউগলের করুণ সুর ছাড়াই।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে গেলে তার সন্তান নূর হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগের দিন জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে বাবাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। সেই ঘটনার পর বাবা অসুস্থ হয়ে যান এবং পরবর্তী সময়ে মারা যান। জেলা প্রশাসক আমার ভাই নূর ইসলামকে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে আমরা সেই চাকরি নেবো না।’

মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের আরেক ছেলে নূরুজ্জামান বলেন, ‘রাষ্ট্রের সম্মানটুকু না নিয়ে আমার বাবা বিদায় নিয়েছেন। এই চাকরি আমরা কেন নেবো? জেলা প্রশাসক এসেছিলেন; তাকে সম্মান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উনার দেওয়া চাকরি তো আমরা নিতে পারি না। কারণ, দুই মাস পর যে আবার চাকরি থেকে বের করে দেবে না, তার কোনও নিশ্চয়তা আছে? আমরা সরকারের প্রতিনিধি হুইপ ইকবালুর রহিমের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।’

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দিনাজপুর সদর উপজেলার যোগীবাড়ি গ্রামে সদ্য প্রয়াত মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে আসেন ডিসি মাহমুদুল আলম। তিনি শোকার্ত পরিবারকে সমবেদনা জানান। এ সময় তিনি তার কার্যালয়ে নূর ইসলামকে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাব দেন।

এদিকে, মুক্তিযোদ্ধার প্রতি অবহেলার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে বিভাগীয় প্রশাসন। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে বিভাগীয় কমিশনার গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) জাকির হোসেন মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়িতে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লোকমান হাকিম, দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোলাম নবী দুলাল।

তদন্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে সরকার সচেতন। আমি ঘটনা তদন্তে এসেছি। ভিকটিম ও পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়েছি। নূর ইসলামকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে।’ তদন্তে যারা দোষী প্রমাণিত হবে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.