স্টাফ রিপোর্টার,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন ::
রাজধানী ঢাকার পুলিশের দুটি চেক পয়েন্টের সামনে বোমা পুতেঁ রাখার ঘটনার দায় স্বীকার করেছে কথিত আইএস। আইএস গ্রুপের কর্মকাণ্ড নজরদারি করে, যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সাইট ইন্টেলিজেন্স একটি টুইট বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে। আইএস দাবি করেছে যে ঢাকার দুটি পুলিশ চেক পয়েন্টে হামলার উদ্দেশ্যে এই বোমা দুটি স্থাপন করা হয়েছিল।
তবে পুলিশের পক্ষ থেকেও আইএস সম্পৃক্ততার তথ্যটি এখনও তা নিশ্চিত করা হয়নি। বিস্ফোরণের আগেই গত বুধবার রাতে খামারবাড়ি ও পল্টন এলাকা থেকে বোমা দুটি উদ্ধার করেছিল পুলিশ।
‘এর পেছনে আইএস, জেএমবি বা কোন সংঘবদ্ধ দল জড়িত কি-না – তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত চলছে,’ বিবিসিকে জানান পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের উপ কমিশনার মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন।
এখন পর্যন্ত তারা সন্দেহভাজন কাউকেই চিহ্নিত করতে পারেননি। এ ব্যাপারে মিস্টার হোসেন বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘আগে এ ধরণের কোন ঘটনা ঘটলে আমরা কিছু ধরণ দেখেই বলে দিতে পারতাম যে এটা কাদের কাজ হতে পারে। কিন্তু এবারের ঘটনাগুলো আইডেন্টিকাল না।’
‘আমরা বিভিন্ন তথ্য, সংগঠনগুলো কার্যক্রম সেগুলো অ্যানালাইসিস করছি। কিন্তু আমরা আমাদের হাতে আসা তথ্যের সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতা প্রশ্নে অনেক অসামঞ্জস্যতা আছে।’
তিনি বলেন, ‘তাই আমরা পুরো বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার পরই গণমাধ্যমকে আমাদের সিদ্ধান্ত জানানো।’হোসেনের মতে, আইএস যে ধরণের বিস্ফোরক ডিভাইস ব্যবহার করতো সেগুলো ‘মেকানিক্যাল ফিচারে বেশ মিল থাকতো। কিন্তু এবারে তেমনটা দেখা যায়নি’।
যেভাবে উদ্ধার করা হয়েছিল বোমা দুটি
গত ২৪শে জুলাই রাত ১২টার দিকে খামারবাড়ি মোড়ের পুলিশ চেকপোস্টের কাছে থেকে এই বোমা সদৃশ বস্তুটি উদ্ধার করা হয়। সেখানকার মেট্রোরেল কর্মীরা সন্দেহজনক এই বস্তুটি দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ঘটনাস্থলে গিয়ে বস্তুটি উদ্ধার করে।
এর আগে রাত ১১টার দিকে ঢাকার পল্টন মোড় এলাকার ট্রাফিক পুলিশ বক্সের কাছ থেকে আরেকটি বোমা সদৃশ বস্তু উদ্ধার করা হয়। একটি বাদামি কার্টনে বোমাটি ঢাকা অবস্থায় ছিল। পরে দুটি বোমারই ‘নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ’ ঘটান বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলের সদস্যরা।
পুলিশের চেক পয়েন্টের বাইরে থেকে এই বোমা পুঁতে রাখার বিষয়ে আইএস দায় স্বীকার করেছে বলে সাইট ইন্টেলিজেন্সের টুইট বার্তায় দাবি করেছে।
কতটা শক্তিশালী উদ্ধারকৃত এই বোমা দুটি এরই মধ্যে প্রাথমিকভাবে দুটি বোমার আলামত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পুলিশ জানিয়েছে যে সেগুলো একই ধরণের সরঞ্জাম দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর কারিগর একই ব্যক্তি হতে পারে।
পুলিশ বলছে, বোমা দুটোয় যে ধরণের বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে সেটা খুব বেশি শক্তিশালী নয়।
এ ব্যাপারে মিস্টার হোসেন বলেন, ‘বোমা দুটির আকার অনুযায়ী সেটার বিস্ফোরক ক্ষমতা তেমন বেশি ছিল না। যদি বোমা বিস্ফোরণের সময় খুব কাছাকাছি কেউ থাকতো ক্ষতির শিকার হতো। তবে খুব বড় ধরণের ক্ষয়ক্ষতির কোন চান্স ছিল না।’
তদন্তের জন্য একটি দুর্ঘটনাস্থল ঘেরাও করে রাখা হয়েছে। এই বোমা স্থাপনের সঙ্গে সম্প্রতি মালিবাগ ও পল্টনে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার যোগসূত্র রয়েছে কি-না, তা খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে পুলিশ।
গত ৩০শে এপ্রিল গুলিস্তানে ও গত ২৬শে মে রাতে মালিবাগে পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ অফিসের সামনে পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘শক্তিশালী’ ককটেল বোমা হামলা চালানো হয়।
এতে পুলিশের এক নারী এএসআইসহ চারজন পুলিশ সদস্য ও একজন রিকশাচালক আহত হয়েছিল।
ওই দুটো ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার দায় আইএস স্বীকার করলেও পুলিশ সে সময় তা অস্বীকার করে। তাদের দাবি, পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করা হতে পারে।
এবারের বোমা উদ্ধারের ঘটনাতেও একই মন্তব্য করেছেন পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের এই উপ কমিশনার।
Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.
Subscribe to get the latest posts sent to your email.