ট্রেন দুর্ঘটনা: মাকে খুঁজছে শিশু মাহিমা:উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

স্পোর্টস রিপোর্টার,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন:: শিশু মাহিমা বারবার কেঁদে কেঁদে বলছিল আম্মা আম্মা। ১১ মাস বয়সী এই শিশুটি জানে না তার মা কোথায়। মায়ের সঙ্গে বেড়াতে গিয়ে সিলেট থেকে উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়ি ফিরছিল শিশু মাহিমা।

ট্রেন দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা শিশুটিকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পাঠায়। শিশুটির মাথায় আঘাত পেয়েছে।শিশুটির বাবার নাম মাঈনউদ্দিন এবং মায়ের নাম কাকলী বেগম বলে জানান তার চাচা শাহ আলম।।আহত শিশুটিকে সকাল ৮টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে আনার পর তার মাথায় দুটি সেলাই করে ডাক্তাররা। এর পর নার্সদের কোলে রাখে অনেকক্ষণ।

এ সময় শিশুটির কান্না থামছিল না। নার্সরা শিশুটিকে চকলেট ও চিপস দিয়ে কান্না থামান। এরপরও বারবার তার মাকে খুঁজছিল শিশু মাহিমা। আম্মা আম্মা বলে চিৎকার করে কাঁদছিল শিশুটি।

হাসপাতালে তার মা আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছে কিনা একথাও জানে না নার্সরা। হাসপাতালে ৪১ জন আহত নারী-পুরুষ চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়েছে। আর ময়নাতদন্তের জন্য ৫ বছরের শিশু সোহামনি ও হরিজন সম্প্রদায়ের রবি হরির (৪০) লাশ পড়ে আছে।

মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে শাহ আলম নামের এক যুবক হাসপাতালে এসে দাবি করে শিশু মাহিমা তার ভাতিজি।এ সময় শিশুটির ফুফু আয়েশা বেগমও সঙ্গে আসেন। তারা চাঁদপুর থেকে খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হাসপাতালে ছুটে আসেন। সারা হাসপাতাল খুঁজে নার্সের কোলে শিশুটিকে পান। কিন্তু তার মায়ের খোঁজ মেলেনি। শিশুটি চাচাকে দেখেই তার কোলে চলে যায়।

হাসপাতালের রেজিস্ট্রার খুঁজেও মা আয়েশা বেগমের খোঁজ মেলেনি বলে জানান চাচা।হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শওকত আলী এ সময় তাকে শান্ত্বনা দিচ্ছিলেন।

শিশুটির আম্মা আম্মা চিৎকারে এ সময় হাসপাতালের নার্সসহ উপস্থিত অনেকেই চোখের পানি রাখতে পারেননি। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত শিশুটির মায়ের খোঁজ মেলেনি। বিকাল ৩টার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে তার চাচা ও ফুফুর হাতে বুঝিয়ে দেন।

এ সময় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌল্লা খান, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফিরোজ উর রহমান অলিউরসহ স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। পরে কাঁদতে কাঁদতে শিশুটি নিয়ে তার চাচা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।

মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৩টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মকন্দপুর রেলওয়ে স্টেশনে সিলেট-চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্সপ্রেসের সঙ্গে চট্টগ্রাম-ঢাকাগামী তুর্ণা নিশিথা আন্তঃনগর ট্রেন দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৪১ জন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হয়। ১২ জনকে ঢাকা ও সিলেট মেডিকেল হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়।

ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক হায়াত উদ দৌল্লা খান জানান, হাসপাতালে আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। মুমূর্ষু রোগীদের ঢাকা-সিলেট পাঠানো হয়েছে।

রোগীদের রক্তের ব্যবস্থাসহ নিহত ১৬ জনের অভিভাবকদের হাতে ২৫ হাজার টাকার অনুদান চেক প্রদান করা হয়। এ ছাড়া নিহতদের বিনা খরচে তাদের বাড়িতে লাশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.