বালিশ কান্ডের পর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকেও ঠকিয়েছিল সাজিন এন্টারপ্রাইজ:উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

নিজস্ব প্রতিবেদক, উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন:: পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বালিশ কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সাজিন এন্টারপ্রাইজের জালিয়াতি রাজশাহীতেও ধরা পড়েছিল। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে অনেক লেখালেখি হয়। অবশেষে মঙ্গলবার ঠিকাদারের লোকজন নকল জেনারেটর বের করে নিয়ে যান। আর আসল জেনারেটর দিয়ে যান। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নকল জেনারেটরটি সরবরাহ করা হয়েছিল। সাজিন এন্টারপ্রাইজের সরবরাহ করা জেনারেটরটি কর্তৃপক্ষের স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে না মেলায় তা ফেরত নেওয়ার জন্য গত ১৩ নভেম্বর চিঠি দেওয়া হয়। চিঠি পাওয়ার পরবর্তী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তাদের ওই যন্ত্রটি ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছিল।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয় ও ভবন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে থাকে গণপূর্ত বিভাগ। তারা হাসপাতালে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য গণপূর্ত বিভাগ এক হাজার কেভি সাবস্টেশন ও ভবন নির্মাণ এবং ৫০০ কেভি জেনারেটর কেনার জন্য ২০১৮ সালে দরপত্র আহ্বান করে। প্রায় ২ কোটি ৮৪ লাখ টাকার এই প্রকল্পের কাজটি পায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে মালামাল সরবরাহের কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত সেই সাজিন এন্টারপ্রাইজ।

২০১৮ সালের ৩ অক্টোবর থেকে ছয় মাসের মধ্যে এই কাজ সম্পন্ন করার কথা ছিল। ৯৭ লাখ ৩১ হাজার টাকায় এই জেনারেটরটি ইউরোপ থেকে কেনার কথা ছিল। গত বছর মে মাসের দিকে কর্তৃপক্ষের অজ্ঞাতে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নবনির্মিত ভবনে জেনারেটর রেখে যায়। নিয়ম অনুযায়ী, বিদেশ থেকে এনে সরবরাহের আগেই ঢাকায় কারখানা পরিদর্শনের সময় যন্ত্রটি চালিয়ে দেখানোর কথা। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি তা করেনি বরং প্রভাব খাটিয়ে যন্ত্রটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেখে যায়।
গণপূর্তের একটি সূত্র জানায়, এলসিতে জেনারেটরটির যে ক্রমিক নম্বর দেওয়া হয়েছে, সেটি দিয়ে অনলাইনে অনুসন্ধান করলে কেনা জেনারেটর ও এর উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য পাওয়ার কথা। কিন্তু অনলাইনে অনুসন্ধান করে তা পাওয়া যায়নি। একতরফাভাবে যন্ত্রটি সরবরাহ করায় কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। তারা একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে।

এছাড়াও গণপূর্ত বিভাগের রাজশাহী কার্যালয় থেকে এই ব্যাপারে অনুসন্ধান চালিয়ে দেখা যায়, গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে চুক্তির আগেই জেনারেটরটির এলসি করা হয়েছিল। এসব অনিয়মের কারণে সাজিন এন্টারপ্রাইজকে তাদের সরবরাহ করা জেনারেটর ফেরত নিয়ে যাওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়।
গণপূর্ত বিভাগের রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী ফেরদৌস শাহনেওয়াজ কান্তা বলেন, তাঁদের স্পেসিফিকেশনের সঙ্গে না মেলার কারণে তাঁরা যন্ত্রটি ফেরত নিতে বলেছিলেন। এবার তাঁরা চট্টগ্রাম বন্দরেই জেনারেটরটি দেখে নিয়েছেন। মঙ্গলবার তাঁরা আগের সরবরাহ করা জেনারেটরটি নিয়ে যান এবং তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী আসল জেনারেটরটি দিয়ে যান।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারটি ভবনে আসবাব ও ইলেকট্রনিক পণ্য সরবরাহের জন্য যে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পায়, তাদের একটি হচ্ছে এই সাজিন এন্টারপ্রাইজ। তদন্তে উঠে এসেছে, সাজিন এন্টারপ্রাইজের সরবরাহ করা মাল সবচেয়ে নিম্নমানের। সেখানে সাজিন একাই পেয়েছে ১৪৬ কোটি টাকার তিনটি কাজ।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.