কোথায় পেলেন ২০ কোটি টাকা জেলার সোহেল রানা:উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন

Rajshahi_Pet_Care
উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

স্টাফ রিপোর্টার ,উত্তরবঙ্গ প্রতিদিন::ট্রেনে করে চট্টগ্রাম থেকে ময়মনসিংহে যাওয়ার পথে রেলওয়ে পুলিশের হাতে নগদ ৪৪ লাখ টাকা, প্রায় ৪ কোটি টাকার এফডিআর ও ব্যাংকের চেক এবং ফেনডিসিলসহ ধরা পড়া চট্টগ্রামের জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের সম্পদের পরিমাণ ১৪ কোটি টাকা। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই তথ্য পেয়েছে।

এর মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকের ২১টি হিসাবে ৯ কোটি টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। এর বাইরে তার পরিবারের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭ হাজার ৬৫৪ টাকা। গত ২৮ জুলাই ঢাকায়

নিজ বাসায় ৮০ লাখ টাকাসহ দুদকের হাতে গ্রেপ্তার হন সিলেট রেঞ্জের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজন্স) পার্থ গোপাল বণিক। সোহেল রানা বিশ্বাসই সর্বপ্রথম পার্থ গোপাল বণিকের নগদ টাকার ব্যাপারে পুলিশকে তথ্য দিয়ে বলেছিলেন, পার্থ গোপাল বণিক, জ্যেষ্ঠ জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক ও তিনি মিলে চট্টগ্রাম কারা অভ্যন্তরে সব ধরনের অবৈধ বাণিজ্য করতেন। সোহেল রানা বিশ্বাস বর্তমানে কিশোরগঞ্জ কারাগারে আছেন।

গত বছর ২৫ অক্টোবর সোহেল রানা বিশ্বাস ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, আড়াই কোটি টাকার ব্যাংক এফডিআর, ১ কোটি ৩০ লাখ টাকার বিভিন্ন ব্যাংকের চেক ও ১২ বোতল ফেনসিডিলসহ ভৈরব রেলওয়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। সে সময় ভৈরব রেলওয়ে থানার পুলিশ তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও মাদক আইনে দুটি মামলা করে। তার কাছ থেকে জব্দ করা ৪৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা কিশোরগঞ্জের সরকারি ট্রেজারিতে জমা দেওয়া হয়।

সোহেল রানা বিশ্বাসের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তদন্তকারী হলেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম ১-এর সহাকারী পরিচালক জাফর আহমদ ও উপসহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম।

দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, জেলার সোহেল রানা বিশ্বাসের নামে স্থাবর সম্পদ আছে ৩৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা, যা তিনি চাচা ও বাবার কাছ থেকে পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার দুটি হিসাব, প্রিমিয়ার ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার দুটি হিসাব, প্রাইম ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার একটি, দ্য সিটি ব্যাংকের ময়মনসিংহ শাখার একটি, সাউথইস্ট ব্যাংক ময়মনসিংহ শাখার একটি ও সোনালী ব্যাংকের চট্টগ্রাম লালদীঘি শাখার একটিসহ মোট আটটি হিসাব থেকে ১ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ৭৭৮ টাকা গচ্ছিত রাখার তথ্য পায় দুদক।

এ ছাড়া তার স্ত্রী হোসনে আরা পপির নামে ময়মনসিংহের সাতটি ব্যাংকের হিসাবে ১ কোটি ৫১ লাখ ৪৭ হাজার ৯৩৪ টাকা গচ্ছিত রাখার হিসাব পাওয়া যায়। সোহেল রানার শ্যালক মো. রাকিবুল হাসানের নামে ময়মনসিংহ জেলার ছয়টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাওয়া যায় ১ কোটি ২৩ লাখ ১১ হাজার ৯৪২ টাকা। সব মিলিয়ে সোহেল রানা ও তার পরিবারের নগদ অর্থের পরিমাণ ৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭ হাজার ৬৫৪ টাকা। এই বিপুল অর্থ আয়ের কোনো বৈধ উৎস খুঁজে পায়নি দুদক।

জানা গেছে, জব্দ করা ২১টি ব্যাংক হিসাবে ১৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। জেলার সোহেল রানা, তার স্ত্রী-সন্তান ও শ্যালকের নামের ব্যাংক হিসাব সম্পর্কে জানতে দুদকের কর্মকর্তা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিলে ২৬টি ব্যাংক হিসাবের তালিকা পাঠানো হয়। এর মধ্যে ২১টি হিসাবে লেনদেনের তথ্য পাওয়া যায়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সোহেল রানার নামে ছয়টি সঞ্চয়ী ও দুটি ৫০ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি টাকার এফডিআর আছে। তার স্ত্রীর নামে তিনটি ৫০ লাখ টাকার মোট দেড় কোটি টাকার এফডিআর ও চারটি অন্যান্য হিসাব রয়েছে। এ ছাড়া শ্যালক রাকিবের নামে দুটি ৫০ লাখ টাকা করে মোট এক কোটি টাকার এফডিআর আছে। সোহেল রানা ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট সাড়ে তিন কোটি টাকার সাতটি এফডিআর আছে। সব মিলিয়ে তার ও তার পরিবারের এফডিআরের পরিমাণ ৯ কোটি টাকা।

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম ১-এর উপসহকারী পরিচালক নুরুল ইসলাম আমাদের সময়কে বলেন, সোহেল রানা গ্রেপ্তার হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের বিষয় তদন্ত অনুমোদন দেয় দুদক প্রধান কার্যালয়। এর পর থেকে আমাদের সমন্বিত দল কাজ শুরু করে। তিনি বলেন, সোহেল রানা, তার স্ত্রী ও শ্যালকের বিরুদ্ধে সম্পদবিবরণী দাখিলের জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। বাকি কার্যক্রম সম্পদের হিসাব দাখিলের পর যাচাই-বাছাই শেষে সিদ্ধান্ত হবে।


উত্তরবঙ্গ প্রতিদিনের সংবাদটি শেয়ার করুন

Discover more from UttorbongoProtidin.Com 24/7 Bengali and English National Newsportal from Bangladesh.

Subscribe to get the latest posts sent to your email.